Monday, August 4, 2025

মামলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিতে উপজেলা বিএনপির চিঠি

আরও পড়ুন

জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে একটি মামলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম বাদ দিতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাকে চিঠি দিয়েছে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি। ২৫ ডিসেম্বর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিছবাহর স্বাক্ষরিত চিঠিতে ১৫ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‌‘বর্ণিত আসামিরা ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সমর্থক হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হলো।’

চিঠিতে দরখাস্তকারী হিসেবে মামলার (দক্ষিণ সুরমা সিআর মামলা ৩৭৪/২০২৪) বাদী সাহেদ আহমদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বাদীর পুরো ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বর দেওয়া রয়েছে। যদিও ওই নম্বরে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

চিঠিতে উল্লেখিত ১৫ জনকে বিএনপির দলীয় পরিচয় দেওয়া হলেও প্রত্যেকের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। যে ১৫ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন, ১৪ নম্বর আসামি আসঝার মিয়া, ২২ নম্বর আসামি আফছর মিয়া, ৪৪ নম্বর আসামি রুবেল আহমদ, ৪১ নম্বর আসামি মাযহারুল ইসলাম মজনু, ৪৮ নম্বর আসামি অলিদ মিয়া, ৬৭ নম্বর আসামি বাবুল মিয়া, ৬৯ নম্বর আসামি পিন্ট (সাইদুর রহমান পিন্টু), ৭২ নম্বর আসামি আত্তর আলী, ৭৩ নম্বর আসামি আ. ওয়াহাব, ৭৬ নম্বর আসামি আ. শহীদ, ৭৭ নম্বর আসামি আমির আলী, ৭৮ নম্বর আসামি নাবিল আহমদ, ৮০ নম্বর আসামি শায়েস্তা আল মামুন, ৮৬ নম্বর আসামি আফরুজ মিয়া, ৯০ নম্বর আসামি সাহেদ আহমদ।

আরও পড়ুনঃ  সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

তাদের অনেকে ছাত্রলীগের কমিটিতেও ছিলেন। এর মধ্যে তালিকায় ৭ নম্বরে থাকা পিন্টু (সাইদুর রহমান পিন্টু) সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সদস্য। ১১ নম্বরের আমির আলী স্থানীয় যুবলীগ নেতা। এছাড়া অন্যান্য সবাই কোনো পদে না থাকলেও স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত বলে জানান বিএনপি নেতাকর্মীরা।

এভাবে চিঠি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিছবাহ সমকালকে বলেন, এরা সবাই বিএনপির সমর্থক। তারা একটি কমিটি গঠন করে তাদের চিহ্নিত করেছেন। যেহেতু তারা বিএনপির লোক সেহেতু তাদের মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য ওই চিঠি থানা পুলিশকে দিয়েছেন। দল থেকে এ রকম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা কিংবা আপনারা এমন চিঠি দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে দল থেকে নির্দেশনা ছিল না বলে জানান। স্থানীয়ভাবে তারা এটা করেছেন বলে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  সেই গরু বিক্রেতাকে ওমরাহ পালনে পাঠালেন অপু বিশ্বাস

সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দীন জানান, তিনি ওই চিঠির বিষয়ে কিছুই জানেন না। চিঠিতে তার স্বাক্ষর রয়েছে বলার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘এটা সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে হবে। তিনি এসব করেছেন।’

এর কিছুক্ষণ পরে ফোন করে সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন ওই চিঠি তারা দেননি। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলের দিকে তিনি এই প্রতিবেদককে আরেকটি চিঠি পাঠান। যেটা দক্ষিণ সুরমা থানা বরাবর দেওয়া হয়েছে। সেখানেও দাবি করা হয়, আগের দেওয়া চিঠিটির স্বাক্ষর ও সিল জাল করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  গাজায় বৃষ্টির মতো ত্রাণ ফেলবে পাশের ২ দেশ

দক্ষিণ ‍সুরমা থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, আসামিদের বাদ দিতে দলের পক্ষ থেকে এ রকম আবেদন করা আইনসম্মত নয়। আবেদন করার পর আরেক পক্ষ সেটিকে ভুয়া স্বাক্ষরে নাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা দেখছেন। তদন্তে জড়িত থাকলে তাদের বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। আবার আবেদনের প্রেক্ষিতেও আসামিদের বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ